জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি প্রধান সহযোগী সংগঠন—যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ—নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেসব সংগঠন রাজনৈতিক সহিংসতা, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই ধারাবাহিকতায় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগকে নিষিদ্ধের সুপারিশ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।”
২০২৫ সালের জুলাই মাসে তীব্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ব্যানারে ব্যাপক গণআন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন গতি পায় যখন নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি ইউনিট সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রত্যাহার করে। এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয় এবং একটি অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ গত এক যুগের বেশি সময় ধরেই চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনোকাণ্ড ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অভিযোগে বিতর্কিত। সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় তারা দেশে "অরাজনৈতিক রাজনৈতিক শক্তি" হিসেবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই সংগঠনগুলোর নিষিদ্ধকরণ একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগও উঠতে পারে যদি বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ না হয়।
আওয়ামী লীগ এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে দলটির কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, “সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের "নতুন রাজনীতি" প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় পদক্ষেপ। তবে তারা সতর্ক করেছেন—এটি যেন ব্যক্তিগত আক্রোশ বা একদলীয় প্রতিশোধের পথে না গড়ায়।